বুদ্ধিদীপ্ত চিকিৎসা - নাসির গাজীর ঝুলি (রায়হান উদ্দীন রুমান)


নাসির গাজীর ঝুলি
বুদ্ধিদীপ্ত চিকিৎসা
রায়হান উদ্দীন রুমান,

   এক দেশে ছিলেন এক বাদশাহ। আর বাদশাহ ছিলেন খুব মোটা। ধীরে ধীরে বাদশাহ আরো মোটা হতে লাগলেন। এমনকি এক সময় এমন মোটা হয়ে গেলেন যে, তিনি নিজের কাজ নিজে করতে পারেন না।
   তাই বাদশাহ একদিন তার উজিরদেরকে ডেকে বলে দিলেন, তেমরা আমার চিকিৎসার জন্য ডাক্তার খোঁজ করে নিয়ে আসো। তখন উজিরগণ বাদশাহর হুকুম পালনের জন্য দেশের ডাক্তারদেরকে একত্রিত করলেন এবং বাদশাহর চিকিৎসায় নিয়োজিত করলেন। কিন্তু কোনো ডাক্তারই বাদশাহর চিকিৎসা করে রোগের সমাধান দিতে পারলেন না।
   এর পরে উজির-প্রজারা সকলে মিলে বাদশাহর জন্য ভালো ডাক্তার খোঁজ করতে লাগলো। ইতোমধ্যে নাসির গাজীর সাথে দেখা হলো এক উজিরের।
   তখন নাসির গাজী তার সমস্ত হাল-পুর্সি করলেন। লোকটা তার সমস্ত কথা খুলে বললেন। তখন নাসির গাজী তাকে বললেন, আছে, চলুন, আমি বাদশাহর চিকিৎসা করবো।
   নাসির গাজী উজিরের সাথে বাদশাহর দরবারে গেলেন এবং বাদশাহকে বললেন, আমি আপনার চিকিৎসা করবো, তবে আমাকে তিনদিন সময় দিতে হবে। আমি এই তিনদিনে আপনার সমস্ত নাড়ীগুলো দেখে এরপর আপনার ঔষধ বের করবো। বাদশাহ বললেন, ঠিক আছে, আপনাকে তিনদিন সময় দেয়া হলো।
   তিনদিন পর যখন বাদশাহ নাসির গাজীকে বললেন, আপনি কি ফল বের করেছেন? তখন নাসির গাজী বাদশাহকে বললেন, আমি আপনার সমস্ত নাড়ী খোজ করে আপনার জন্য কোনো ঔষধ খুঁজে পেলাম না। বরং আমি দেখলাম, আপনার আর হায়াত বাকী নেই, অর্থাৎ আপনি আর মাত্র চল্লিশ দিন বাঁচবেন। যদি তার থেকে বেশী সময় বাঁচেন, তাহলে আমাকে কয়েদ করবেন। 
    তখন বাদশাহ তার উজিরদেরকে হুকুম দিলেন, গাজী সাহেবকে বন্দী করো। এরপরে যখন একদিন দু’দিন করে সময় কাটতে লাগলো, তখন বাদশাহ মৃত্যুর ভয়ে আস্তে, আস্তে খানা-দানা বন্ধ করে দিলেন এবং বাদশাহ আস্তে আস্তে চিকন হতে লাগলেন।
    যখন চল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেল, কিন্তু বাদশাহ মরেননি, তাই বাদশাহ নাসির গাজীকে ডেকে বললেন, আপনি মিথ্যা কথা বললেন কেন? চল্লিশ দিন তো পার হয়ে গেছে, কই, আমি তো মৃত্যুবরণ করিনি?
    তখন নাসির গাজী বললেন, আমি আপনার নাড়ীগুলো পরীক্ষা করে দেখলাম, এরচেয়ে বড় ঔষধ আপনার জন্য আর কিছু হতে পারে না। তাই আমি এমন কাজ করলাম। আর এর বদৌলতেই আপনি চিকন হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
    তখন বাদশাহ নাসির গাজীর হিকমতপূর্ণ চিকিৎসায় মুগ্ধ হয়ে গেলেন এবং তাকে অনেক পুরস্কার দিয়ে বিদায় করলেন।

Maruf Ahmed (মারুফ আহমেদ)

আমি একজন ব্লগার এবং স্টুডেন্ট। লেখালেখি এবং টেকনোলজির প্রতি অসামান্য আগ্রহ থেকেই আমার হাত ধরে bologar.com এর সূচনা। নতুন কিছু জানতে এবং জানাতে পারলে আমি আনন্দ পাই। যেকোন বয়সের পাঠক এখানে সাদরে আমন্ত্রিত।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post